বিশ্ব অ্যাজমা দিবস: You Can Control Your Asthma
১৯৯৮ সালে স্পেন এর বার্সেলোনায় ৩৫টী দেশের অংশ গ্রহণের মাধ্যমে সর্ব প্রথম ‘’বিশ্ব অ্যাজমা দিবস’ Global Initiative for Asthma (GINA) এর উদ্যোগে উদযাপিত হয়।
পরের বছরগুলোতে অধিকাংশ ৬ই মে দিবসটি উদযাপিত হলেও এই বছর আজ ৩রা মে ‘‘আপনিই পারবেন আপনার হাঁপানির নিয়ন্ত্রণ করতে’’ (You Can Control Your Asthma) স্লোগানের মাধ্যমে পালিত হচ্ছে বিশ্ব অ্যাজমা দিবস।
অ্যাজমা বা হাঁপানি শ্বাসনালীর দীর্ঘস্থায়ী ও প্রদাহজনিত একটি রোগ। বিশ্বের প্রায় ২০ কোটি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। প্রতিবছর প্রায় দুই লাখ লোক এই রোগে মৃত্যুবরণ করে। ধারনা করা হচ্ছে আমাদের দেশে ৭০ লাখ রোগী এই রোগে ভুগছেন। তাদের ৫০ শতাংশের বয়সই ১৫ বছরের নিচে।যা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়।
চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এখনও হাঁপানির সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে না পেলেও কতগুলো বিষয়কে হাঁপানির জন্য দায়ী বলে মনে করছেন:-
এলার্জেনের মুখোমুখি হওয়া, যেমন-ঘরের ধুলা ও ময়লা, পোকা-কীট, পশুপাখির পালক, ছত্রাক, মল্ট, ইস্ট,পশুর রোম, তেলাপোকা, পরাগ-রেণু ও ছত্রাক,বিভিন্ন দ্রব্যের প্রতি যদি কোন ব্যক্তি অতিমাত্রায় অ্যালার্জিক হন তাহলে তাঁর হাঁপানি হতে পারে।
বিভিন্ন উত্তেজক পদার্থ, সিগারেটের ধোঁয়া, যানবাহনের ধোঁয়া,বাতাসে সীসর পরিমাণ বেড়ে যাওয়া,বিভিন্ন এসিড যেমন স্বর্ণকারের কাজ,সীসা সহ নানান বিষাক্ত কেমিক্যাল ব্যবহারকারী কল-কারখানায় কাজ করলেও ফুসফুসের প্রদাহ(স্থায়ী পরিণতি হাঁপানি),অতি মাত্রায় ধূমপান,ফুসফুসে যক্ষ্মা সহ শ্বাসযন্ত্রের নানান ভাইরাল রোগ, এনএসএআইডি (ব্যথা নিরাময় কারী ওষুধ)এমনকি এসপিরিনও কোনো কোনো ক্ষেত্রে হাঁপানির কারণ হতে পারে।
এ ছাড়া মানসিক চাপে থাকলে হাঁপানির তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে।
যেসব খাবারে সাময়িক শ্বাস কষ্ট বা হাঁপানি দেখা দিতে পারে/বেড়ে যেতে পারে:
চিংড়ি মাছ, পাকা কলা, গরুর মাংস, ইলিশ মাছ, বোয়াল মাছ, আনারস, বেগুন, নারিকেল ও হাঁসের ডিম। গরুর দুধও শিশুর অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। ঠাণ্ডা পানীয় বা খাবার বিভিন্ন সুগন্ধি, মশার কয়েল কীটনাশকের গন্ধ থেকেও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে।
হাঁপানি একটি দীর্ঘমেয়াদি রোগ, তাই এই রোগের ওষুধগুলোও দীর্ঘমেয়াদি।ঔষধ বন্ধ করা যাবেনা।
আপনি কিম্বা আপনার নিকটাত্মীয়ের হাঁপানি রোগী থাকলে তাঁদের ডাক্তারের পরামর্শ ঠিকমত পালন করতে বলুন।
সময় মত ঔষধ/ইন-হেলার নিতে বলুন।
হাঁপানি রোগীর ফুসফুসে ইনফেকশন হলে,মারাত্মক শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে সাহায্য করুন।
তাঁদেরকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে ধূমপান থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে বলুন।
বাসায় কার্পেট, কোনো পোষা জীবের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে বলুন(পাখি,কুকুর,বিড়াল না রাখাই উত্তম)
বিছানার চাদর বালিশ কৃত্রিম আঁশ যুক্ত হলে তা ব্যবহারে বিরত থাকতে বলুন।
বাসায় কোনো ধরনের AEROSOL(কীটনাশক)স্প্রে,ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করার সময় রোগীকে অন্তত: কয়েক ঘণ্টার জন্য দুরে রাখুন।
হাঁপানি রোগীকে ঘুমের ঔষধ নিতে দেবেন না।এতে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।
ছবি সূত্র:ইন্টারনেট।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন