জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

সোমবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১২

মিলন মেলা শেষ হলো কি!

মিলন মেলা শেষ হলো কি!

শেষের দিকে দুর্দান্ত জমে উঠেছে বই মেলা,খবর আসে শেষের দিকে উপচে পড়া ভিড় সামাল দিতে সবাই হিমসিম খেয়ে গেছে,দাবি উঠেছে মেলার পরিসর বাড়ানোর।
বই মেলাকে ঘিরে বাঙালির এই আগ্রহ মনে করিয়ে দেয় ৫২-র মহান ভাষা আন্দোলনের কথা,সকল ভাষা শহীদের কথা,মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠা করতে সেদিন যারা আত্মত্যাগ করেছিল।
আজকের প্রজন্ম বই পড়ার প্রতি উত্সাহী হয়েছে,
এই প্রজন্ম বই কিনছে ভেবে মনে মনে পুলকিত হই!
মনের এ ভালো লাগা ঘোর টুকু কাটতে সময় লাগেনা পরিচিত কয়েকজনকে যখন জিজ্ঞাসা করি,”কি বই কিনলে,কার বই বেশি চলে?”
তাদের অনেকের জবাব হল প্রথম কয়েকদিন ঘুরে ফিরে দেখে এসেছি,ভালো লেখকের বই আসেনি খুব একটা,পরের দিকে গেছি...
হুমায়ূন আহমেদ এর সেই সময়,হিমু এবং একটি রাশিয়ান পরী কিনেছি,কিনেছি মিলনের বই
কলকাতার লেখকদের বই ভালো চলছে..
আমি তাদের বলি সমর পাল এর বই কয়টা কিনেছ?
বলে সমর পাল কে ভাইয়া?
(এদের একজন বিবিএ/এমবিএ করা)
বলি নাজমা জামানের বই?
খুঁজে পাইনি!
আনিসুল হক,ডাঃশুভাগত চৌধুরী,আহমেদ মাযহার,মইনুল আহসান সাবের,লুত্ফর রহমান রিটন,কবি নুরুল হুদা, ডঃ জাফর ইকবাল ??
বলে একটা কিনেছি জাফর ইকবাল এর
আনিসুল হক এর বই ভালো চলছে
আর কার?
জীবনান্দ দাসের বইয়ের ভালো কাটতি..
অনেক কে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জিজ্ঞেস করি বন্ধু সামিরা আব্বাসীর বই?
রেশমা রেজিনা উর্মী,আঞ্জুমান রোজী,ডাঃ সুরাইয়া হেলেন,সৌনক দত্ত,সেলিমা তসলিম ছন্দা,কবি এনাম মাহীন সহ নতুনদের বই কয়টা কিনলে?
আমতা আমতা করে তারা,,ভাইয়া নেড়ে চেড়ে দেখেছি অনেকের বই, আসলে ভালো আর নামকরা লেখক না হলে শুধু শুধু টাকা খরচ করা হয়!পড়া হয়না।
আর বই এর যা দাম এবার!
আমি হতবাক হয়ে যাই।
উপচে পড়া ভিড় দেখে প্রশস্তি গাই কি করে?

আমাদের প্রজন্মকে মেলা মুখী করতে “প্রথম-আলো”কর্তৃপক্ষ কে তাদের ব্লগ মার্চ এর ১ তারিখ পর্যন্ত বন্ধ করতে হয়!(পাঠক ক্ষমা করবেন অনুমান নির্ভর উক্তির জন্য,এছাড়া আমি আর কোন কারণ দেখিনি।)

বরাবরের মত এবার একুশের গ্রন্থ মেলার স্টল বরাদ্দ এবং প্রাপ্তি সমালোচনার ঊর্ধ্বে থাকেনি,একুশের পদক ও নাকি আজকাল বিশেষ কারো ইচ্ছে অনিচ্ছার উপর নির্ভর করছে!

এত কিছুর পরও আমরা আশার আলো দেখেছি,আমরা দেখেছি এক-ঝাঁক নতুন লেখক সাহস করে এগিয়ে এসেছেন,যদিও অনেক বই এর প্রচ্ছদের মান.বানান ভুল খুবই দৃষ্টি কটু লেগেছে.
তবুও আসুন তাদের কে স্বাগত জানাই!
প্রকাশনা সংস্থা গুলো নতুনদের জন্য কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয়,তারা আগ্রহী তাদের বাণিজ্য আর বিপণনের
পিছনে তাই প্রতিষ্ঠিত লেখকের লেখার জন্য তাদের ধরনা দেয়া দেখে বোধ শক্তি হারিয়ে ফেলি।
আর এক শ্রেণীর প্রতিষ্ঠিত,বোদ্ধা,গুনি লেখকদের আমি জানি যারা নবীনদের নুন্যতম উত্সাহ দিতে রাজি নয়,এই মানসিকতার উন্নয়ন কবে হবে!
তারপর ও নতুন নতুন বই বাজারে এসেছে ,কিছু প্রকাশক সাহস করে নতুনদের জন্য পথ উন্মুক্ত করে দিয়েছেন।তাঁদের জন্য শুভেচ্ছা।

বহু বছর মেলা প্রাঙ্গণে যাওয়া হয়না।বাংলা একাডেমী বই মেলা আমাদের চেতনার মাঝে স্থান করে নিয়েছে আর তাই
বলতে চাই,"হয়ত আমরা বই পড়ছি কিন্তু ভাবছি না। চাহিদা তৈরি করতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি,বিদেশী অপ-সংস্কৃতির লালন,গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিয়ে আমরা ভুলতে বসেছি
আমাদের কৃষ্টি,চেতনা,আমাদের ঐতিহ্য আর গৌরব গাঁথা।"
"আমার রক্তে চেতনার বীজ পোঁতা না থাকলে ওদের তো দোষ দেয়া যায় না।"ক্ষেদের সুরে কথাটা বলেছিলেন একজন প্রতিষ্ঠিত লেখক।তাঁর সাথে আমিও একমত।

আমাদের সকল গৌরব গাঁথা ৪৮,৫২,৬৯ এবং একাত্তরের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রকৃত ইতিহাস প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে কারা ছড়িয়ে দেবে।এই দায়বদ্ধতা আপনার আমার,সকলের।

(বন্ধুরা সময়ের সীমাবদ্ধতা আর পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে অনেক জ্ঞানী গুণীজনের নাম উল্লেখ করতে পারিনি।আমার এই অক্ষমতাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি।ধন্যবাদ।)

রিয়াদ,সৌদি আরব।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন