জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

সোমবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১২

পুরনো ঢাকার কয়েক লাখ লোকের যাতায়ত সুবিধাঃ নগর পরিকল্পনাবিদ,যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষন করছি

পুরনো ঢাকার কয়েক লাখ লোকের যাতায়ত সুবিধাঃ নগর পরিকল্পনাবিদ,যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষন করছি


বেকারত্বের অবসানে,শিক্ষা,অধিক উপার্জনের আশায় মানুষ অন্তহীন ছুটে আসছে ঢাকায়।বিশেষ করে রাজধানীতে ভিড় জমাচ্ছে কাজের সন্ধানী মানুষ।ছিন্নমূল মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে ক্রমাগত।
বাড়তি মানুষের এর চাপ এখন তিলোত্তমা ঢাকার সৌন্দর্য,নাগরিক জীবনে অস্বস্তি বয়ে আনছে।
ঢাকার পরিধি এখন এত বিশাল যে সমস্ত উপ-শহরগুলো থেকেও মানুষ প্রতিনিয়ত অফিস,ব্যবসা কিম্বা চিকিৎসার প্রয়োজনে ঢাকা আসছে।
বাড়তি বিপুল জনসংখ্যার এই মেগা-সিটি ঢাকা এখন বিশ্বের জনবহুল শহর গুলোর মধ্যে সপ্ত আশ্চর্যের দেশ(আধুনিক বিশ্বের)ইংরেজীতে বলা হয়, Dhaka (Bangladesh) traffic has been called one of the 7 wonders of the modern world
এই বাড়তি মানুষের সকল চাহিদা পুরন বিশেষ করে বিদ্যুৎ,গ্যাস,পানি ৫০ বছর আগে করা নগর পরিকল্পনায় আদৌ সম্ভব হচ্ছেনা।
কোনো সরকারের পক্ষে এসব চাহিদা মোকাবেলার আপাতত কোনো সম্ভাবনা দেখিনা
গ্যাস এর উৎপাদন চাহিদার তুলনায় অনেক কম,বিদ্যুৎ ঘাটতি ভয়াবহ।
সকল সরকার-ই চেষ্টা করে জনগণের নূন্যতম চাহিদা পূরণ করে একটা সুন্দর সেবা প্রদান করতে।
বাস্তব হলেও সত্য আমাদের উৎপাদন নেই,ওয়াসা,সিটি কর্পোরেশন সহ অনন্য সংস্থাগুলো এখানে অসহায়।
নাগরিকদের নুন্যতম সুবিধা দিতে যা যা প্রয়োজন তা তাদের নেই,সম্পদ আমাদের সীমাবদ্ধ,এই সীমাবদ্ধ সম্পদের সুষ্ঠ প্রয়োগ হয়না একশ্রেণীর দুর্নীতিবাজ কর্মচারী কর্মকর্তাদের কারণে,যদিও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দের অঙ্কটা খুব কম নয়,তবুও এর ব্যবস্থাপনা ঘুণে ধরা(দুর্নীতিগ্রস্ত)
অনেকটা বলা যায়,"ডিম পারে হাসে খায় বাঘডাসে"।

তবুও আমরা সরকারের কাছে যৌক্তিক-অযৌক্তিক অনেক কিছু দাবি করতে থাকি,অপ্রতুল সরবরাহের কারণে,মধ্যস্বত্ত ভুগিদের কারণে সময় মত সব নাগরিক সুবিধা জনগণ পায়না।
যদি বলি বর্তমানে ঢাকার সবচেয়ে বড় সমস্যা কি তবে বলব ভয়াবহ যানজট,অপরিকল্পিত ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা,গ্যাস,বিদ্যুৎ ও পানি সমস্যা।
এই সমস্যা আসন্ন গ্রীষ্মে আরও প্রকট হবে,এই দুর্বলতা কাজে লাগাতে সুবিধা বাদীরা জনগণের ক্ষোভকে পুঁজি করে রাজপথে নামবে,অস্থিরতা কারো কাম্য নয়।
চাই বিজ্ঞ উন্নয়ন পরিকল্পনা।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর পদ্মা সেতু সহ অনেক অনেক উন্নয়ন কর্মসূচি নিয়েছে,এর মধ্যে বিদ্যমান সমস্যা গুলোর কথাও তাদের মাথায় আছে,বিদ্যুৎ সমস্যার উন্নয়ন রাতারাতি সম্ভব নয়,নতুন নতুন গ্যাস ক্ষেত্র উন্মোচিত নাহলে গ্যাস সরবরাহ বাড়বে না।
Wasa মান্ধাতা আমলের যন্ত্রপাতি নিয়ে কোনো রকমে ধুঁকে ধুঁকে চলছে,গৃষ্মে দেখা যাবে সেনাবাহিনী জরুরি পানি সরবরাহে ব্যস্ত হবে।

আমি নগর পরিকল্পনাবিদ,সিটি কর্পোরেশন,যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এর কাছে আবেদন করছি আসুন প্রথমে ঢাকার দুঃসহ ট্রাফিক এর সমাধান করি এতে করে মানুষের দুর্ভোগ অনেকখানি কমবে।
১.পুরনো ঢাকার লালবাগ,পোস্তা,চকবাজার,ইসলামবাগ,আজিমপুর,নবাবগঞ্জ,হাজারীবাগ,কামরাঙীরচরের একাংশের কয়েক-লাখ লোক বর্তমানে আজিমপুরের প্রধান সড়ক ধরে নিউ মার্কেট কিম্বা সায়ন্সল্যাব এ আসতে রিক্সায় চড়ে আসতে পারেনা(ভিআইপি সড়ক),হয় তাদের C.N.G কিম্বা গাড়ি নিয়ে আসতে হয় আজিমপুর সড়ক দিয়ে ইডেন কলেজ হয়ে।
নিউমার্কেট,সায়ন্সল্যাব কিম্বা অন্য কোথাও যেতে হলে কামরাঙীর চর, নবাবগঞ্জ,পিলখানা,শেখ-সাহেব বাজার,আমলিগোলা,হাজারীবাগ,লালবাগ এর কয়েক-লাখ লোককে আসতে হয় নিউ পল্টন লাইনের অত্যন্ত সরু গলি দিয়ে। অনেক ক্ষেত্রে পাশাপাশি দুটি রিক্সা চলেনা।
যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় এই অন্ধ গলির ভেতর,রাতের বেলায় এখানের ল্যাম্প পোস্টে বাতি জ্বলেনা,রয়েছে ছিনতাইকারীর উপদ্রব।
আজিমপুরে গোঁদের উপর বিষফোঁড়ার নাম হচ্ছে বিগত বিএনপি-জামাত সরকারের আমলে অনুমোদন প্রাপ্ত ভিকারুন্নিসা স্কুল।
আজিমপুর চায়না-বিল্ডিং এর সামনে গড়ে উঠা এই স্কুলের ছাত্রীদের আসা যাওয়া বিশেষ করে সকালে এবং ছুটির পরে যত্র-তত্র যেভাবে প্রাইভেট গাড়ি গুলো দাড়িয়ে থাকে তা কল্পনা করে অফিস যাত্রী সহ সবাইকে শিউরে উঠতে হবে।

একজন ছাত্রনেতা সাংসদ(প্রাক্তন)এসব সমস্যা সমাধানে আজিমপুর কবরস্থানের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে আজিমপুর কলোনির ভিতর দিয়ে একটি
রাস্তা বের করার চেষ্টা করে অনেক আমলা ও দলের মধ্যে কলহের কারণে প্রচণ্ড বাধার মুখে পড়ে সরে আসেন।
পুরনো ঢাকার আরেকজন একজন সাংসদ(প্রাক্তন)বিডিআরের(পিলখানা)ভিতর দিয়ে একটি রাস্তা নিউমার্কেট পর্যন্ত খুলে দেবার জন্য অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
নীলক্ষেত,বাকুশাহ মার্কেট,নিউ মার্কেট,চাঁদনী- চক,গাউসিয়া মার্কেট,ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট,ঢাকা কলেজ, ইম্পেরিয়াল কলেজ,টিচার্স ট্রেনিং কলেজ,
গভঃ ল্যাবরেটরি স্কুল এ পড়তে আসা ও ক্রেতাদের কথা ভাবলে আপনি শিউরে উঠবেন।
কথা হচ্ছে এসব মার্কেট এর নিজস্ব কোনো পার্কিং নেই।রাস্তাটি ভিআইপি করে দেয়ার কারণে এসব মার্কেটের ব্যবসায়ীদের পোয়া বারো!
এখন গোটা রাস্তা জুড়ে সাহেব-মেমসাহেবদের গাড়ি পার্ক করা যত্র তত্র।

রাস্তা সামান্য যেটুক খোলা তা দিয়ে আজিমপুরের দিক থেকে আসা পুরনো ঢাকার,সিটি সার্ভিস বাস,টেম্পো গুলো,পড়তে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী নিয় ঠায় দাড়িয়ে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।সামনে নিউমার্কেট,নীলক্ষেত দুই দিক থেকে আসা গাড়ী অপেক্ষায়..

“আমি বলি কি উন্নয়নের ছোঁয়া এখানেও লাগুক নীলক্ষেত,বাকুশাহ মার্কেট,নিউ মার্কেট,চাঁদনী- চক,গাউসিয়া মার্কেট,ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট সহ সংলগ্ন সকল মার্কেট হয় তাদের নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা নিজেরা করুক নাহয় নিচতলা গুড়িয়ে দেয়া হোক।“

গভঃনিউ মার্কেট বর্তমানে বিশাল জায়গা নিয়ে দাড়িয়ে আছে এটা ভেঙ্গে নীচে গাড়ি পার্কিং রেখে কয়েক-তলা উঁচু করা যেতে পারে এতে কয়েক হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে,পুরনো ঢাকার লোকজনের কথা ভেবে ভিআইপি রাস্তা খুলে দেয়া হোক।
মার্কেট বা দোকান মালিকদের কাছ থেকে "টেবিলের নিচ দিয়ে খেয়ে ট্রাফিক প্লান" কারো কাম্য নয়।

ঠিক একই ভাবে শাহবাগ থেকে সায়ন্সল্যাব পর্যন্ত রাস্তা উন্মুক্ত করে দেয়া হোক,এখানে যত্র তত্র গাড়ি পার্কিং হচ্ছে জ্যাম কমেনি, ভিআইপি সড়ক করার পর জ্যাম আও বেড়েছে।একই কথা এখানেও সুবিধা দেখেন কার ?জবাব হল দোকান মালিকদের।

রিক্সার বিকল্প মধ্যবিত্ত আর নিম্ন মধ্যবিত্তদের কাছে নেই,পুরনো ঢাকায় নগরীর ব্যস্ত সময়ে দ্বিগুণ টাকা দিয়েও কোন C.N.G পাওয়া যায়না। এখানকার গলি এত সরু যে রিক্সায় ছাড়া যাতায়াত সম্ভব নয়,অথচ নগর পরিকল্পনাবিদদের পরিকল্পনা দেখলে মনে একটি প্রশ্ন জেগে উঠে আপনারা ভিআইপি সড়কের নামে পুরনো ঢাকার কয়েক লাখ লোক কে আলাদা করে কোন তিলোত্তমা ঢাকার কথা ভাবছেন?
আপনারা ভুস-ভুস করে গাড়ি নিয়ে চলে যাবেন আর পুরনো ঢাকার লোকজন ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকবে একটি রিক্সার আশায়,” এই রিক্সা যাবে?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন